প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আবিষ্কার
বিশ্বযুদ্ধ এই শব্দটির সাথে আমরা কমবেশি সবাই পরিচিত। আজ থেকে প্রায় ১০০ বছর আগে পৃথিবীর ইতিহাসে ঘটে যাওয়া সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনা ছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধ। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতার কথা আমরা কমবেশি সবাই জানলেও আমরা অনেকেই এটা জানি না যে মানবজাতির জীবনযাত্রার মান পরিবর্তনে এই যুদ্ধ অনেক কার্যকরী ভুমিকা পালন করেছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের মাধ্যমে যেমন পৃথিবীতে ঘটেছে নানান ধরনের পরিবর্তন তেমনি সৃষ্টি হয়েছে নানান ধরনের আবিষ্কার। মূলত সেসময় যুদ্ধকে কেন্দ্র করেই তৈরি করা হয়েছিল নানান ধরনের কৌশল এবং পরিকল্পনা যা থেকে বিভিন্ন আবিষ্কারের সৃষ্টি হয়েছিল। এমনকি প্রথম বিশ্বযুদ্ধের এই আবিষ্কারগুলোই বর্তমানে আমরা ব্যাপকভাবে ব্যবহার করে চলেছি। আজকে আমরা এমনি কিছু আবিষ্কারের ব্যাপারে জানব যেগুলো কিনা মূলত প্রথম বিশ্বযুদ্ধের মাধ্যমেই এসেছে।
১. স্যানিটারি টাওয়েল
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের জনপ্রিয় একটি আবিষ্কার হল স্যানিটারি টাওয়েল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় যুদ্ধের সৈন্যদের জন্য যথেষ্ট স্বাস্থ্যকর পরিবেশ ছিলনা। সেসময় Kimberly-Clark নামক আমেরিকার একটি ছোটখাটো প্রতিষ্ঠান অধিক শোষণ ক্ষমতা সম্পন্ন এই টাওয়েল তৈরি করে। যুদ্ধের সময় আমেরিকান সৈন্যরা ও তার মিত্র বাহিনী এই স্যানিটারি টাওয়েলের সরবরাহ পেত। এছাড়া সেসময় রেড ক্রসের নার্সরাও তাদের ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধির কথা ভেবে এই টাওয়েল ব্যবহার করতে শুরু করে। মূলত এই অধিক পানি শোষণ ক্ষমতা সম্পন্ন টাওয়েল এর ধারণা থেকেই আজকের ন্যাপকিন এর ধারণা এসেছে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর, Kimberly Clark সামরিক বাহিনী এবং রেড ক্রস থেকে তাদের তৈরি করা ব্যান্ডেজগুলোর অবশিষ্ট অংশ কিনে নেয় এবং পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথমবার বাণিজ্যিকভাবে স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরি করে যার নাম দেয়া হয় Kortex।
২. টিস্যু
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম জনপ্রিয় আরেকটি আবিষ্কার হল টিস্যু বা হ্যানকিস কাগজ। আজকে আমরা যে টয়লেট টিস্যু বা মুখ মোছার জন্য ফেসিয়াল টিস্যু ব্যবহার করি তা মূলত প্রথম বিশ্বযুদ্ধকালীন সময়ে তৈরি হয়েছিল। অনেক পরীক্ষানিরীক্ষা চলার পর ১৯২৪ সালে Kimberly-Clark কোম্পানির মাধ্যমেই যাত্রা হয় বর্তমান সময়ে ব্যাপকভাবে প্রচলিত এই টিস্যুর। Kimberly Clark কোম্পানির তৈরিকৃত এই টিস্যুর নাম দেয়া হয় Kleenex। যুদ্ধের সময় এই টিস্যু অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি আবিষ্কার ছিল।
আরো জানুন: উত্তর কোরিয়া VS দক্ষিণ কোরিয়া
৩. সূর্যের আলো
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শেষের দিকে, ১৯১৮ সালে জার্মানির বার্লিনে প্রায় অর্ধেক শিশুই রিকেটস রোগে আক্রান্ত হয়েছিল। সেসময় এই রোগের সঠিক কারন কারো জানা ছিল না। তখন একজন জার্মান ডাক্তার Kurt Huldschinsky চারটি বাচ্চার উপর পরীক্ষা করেন। এ পরীক্ষা থেকে তিনি বুঝতে পারেন যে, রোদের আলোর মাধ্যমে রিকেটস রোগের সমাধান সম্ভব। কেননা রোদে ভিটামিন ডি থাকে যার অভাবে রিকেটস রোগ হয়, তাই রিকেটস রোগ থেকে বাচতে সূর্যের আলো অপরিহার্য। তার এই আবিষ্কার প্রকাশিত হবার পর, যুদ্ধের সৈন্যরাও রিকেটস রোগ থেকে মুক্তি পাবার জন্য রোদ পোহাতে শুরু করে।
৪. দিবালোক সংরক্ষণ সময়
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রথম দিকে সময় সম্পর্কে বিশেষ কোন ব্যবস্থা ছিলনা। যার কারণে সৈন্যরা কখন ঘুমাবে কিংবা কখন কোন কাজটি করবে সেটাও নির্ধারণ করা কষ্টসাধ্য ছিল। ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দে বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন তাঁর একটি প্রবন্ধে সর্বপ্রথম দিবালোক সংরক্ষণ সময় ব্যবস্থার ধারণা তুলে ধরেন। এরপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধে দিবালোক সংরক্ষণ আবিষ্কৃত হওয়ার পর সময় বেশ কিছুটা এগিয়ে দেয়া হয়। এই যেমন রাত ১১টাকে বারোটা করে দেয়া হয়, ফলে সৈন্যরা ঘড়ি দেখে সত্যিকার সময়ের আগেই ঘুমাবে। আবার সত্যিকার সময়ের আগেই ঘুম থেকে জেগে উঠবে এবং দিনে কাজ করার জন্য সময় বাড়বে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলোতে এই নিয়ম চালু করা হয়েছিল। যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর কোনো কোনো দেশ পরবর্তিতে প্রকৃত সময়ে ফিরে এসেছিল। তবে এখনও অনেক দেশ এই পদ্ধতির ব্যবহার করে থাকে।
৫. হাত ঘড়ি
ধারনা করা হয়, প্রথম বিশ্বযুদ্ধকে কেন্দ্র করেই হাত ঘড়ি আবিষ্কৃত হয়েছিল। তবে অনেকেই এই নিয়ে দ্বিমত পোষণ করেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় হাত ঘড়ি থাকার ফলে সৈন্যরা সময় জ্ঞান সম্বন্ধে অবহিত থাকত। ফলে তারা সময়মত কাজ করতে সক্ষম হতো। কখন যুদ্ধে যেতে হবে, কখন ঘুমাতে হবে কিংবা কখন খেতে হবে এসকল কিছু একটা রুটিনের আওতায় চলে এসেছিল। বলা যেতে পারে, এই হাত ঘড়ির কারনেই সৈনিকদের মধ্যে এক ধরনের শৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছিল। আর বর্তমান বিশ্বে এই হাতঘড়ি আমাদের নিত্যদিনের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় বস্তুগুলোর মধ্যেই একটি।
৬. টি-ব্যাগ
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আরেকটি অন্যতম জনপ্রিয় আবিষ্কার হল টি-ব্যাগ। অনেক পূর্বেই চায়ের আবিষ্কার হলেও টি-ব্যাগের আবিষ্কার হয়েছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়। টি-ব্যাগ কোন যুদ্ধকালীন সমস্যা সমাধানের জন্য উদ্ভাবিত হয়নি। তবে টি-ব্যাগের আবিষ্কারের কারনে চা বানানো অনেক সহজ হয়ে গিয়েছিল এবং সৈন্যরা চা খেয়ে অনেকক্ষণ না ঘুমিয়ে থাকতে পারতো।
আরো জানুন: মানুষ ছাড়া পৃথিবী কেমন হবে
৭. চেন
১৯ শতকের মাঝামাঝি সময়ে জামাকাপড়ে ফিতা ব্যবহার করা হতো যা বেশ সময় সাপেক্ষ একটি ব্যাপার ছিল। তাই সেসময় বিভিন্ন মানুষ ঠাণ্ডা থেকে বেচে থাকার জন্য হুক, ক্লাস্প ইত্যাদি নিয়ে কাজ করছিল। এসময় একজন সুইডিশ-আমেরিকান ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার গিডিয়ন সানবেক সফলভাবে চেন আবিষ্কার করতে সক্ষম হন। তার এই আবিষ্কারের পর প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অংশ নেয়া সৈন্যরা চেন ব্যবহার করতে শুরু করে। যেহেতু যুদ্ধের সময় বেশি সময় পাওয়া যায় না, তাই সৈন্যদের পোশাকে চেন ব্যবহার করা হয়েছিল যাতে তারা দ্রুত ও সহজেই কাপড় খুলতে ও পড়তে সক্ষম হয়। যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর সাধারন নাগরিকরাও ব্যাপকভাবে চেন ব্যবহার করতে শুরু করে।
৮. স্টেইনলেস স্টিল
১৯১৩ সালে সর্বপ্রথম স্টেইনলেস স্টিলের আবিষ্কার করেন হ্যারি ব্রেয়ারলি। স্টেইনলেস স্টিল হল এমন এক ধরনের স্টিল যাতে কখনো মরিচা ধরে না। এটি লোহার থেকেও বেশি মজবুত এবং শক্তিশালী। স্টেইনলেস স্টিলের আবিষ্কারের পর ব্রিটিশ সেনাবাহিনী স্টিলের বন্দুক তৈরি করে যা যুদ্ধকে সহজ করে এবং বুলেটের অপচয় রোধ করে। পরবর্তীতে স্টেইনলেস স্টিলের কারনেই ধাতব শিল্পে অনেক বড় এক বিপ্লব সৃষ্টি হয়। একইসাথে বর্তমান আধুনিক বিশ্বে স্টেইনলেস স্টিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান।৯. প্লাস্টিক সার্জারি
বর্তমান বিশ্বের আধুনিক প্লাস্টিক সার্জারির ধারনা মূলত প্রথম বিশ্বযুদ্ধ থেকেই এসেছে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় বিভিন্ন ধরনের বিস্ফোরক বস্তু যেমন আর্টিলারি, মেশিন গান এবং বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হতো, যার কারনে সৈন্যরা প্রায়ই আঘাতপ্রাপ্ত হতো। তাই সেসময় সৈন্যদের আঘাতপ্রাপ্ত স্থানের চিকিৎসা করার জন্য প্লাস্টিক সার্জারির পন্থা বেছে নেয়া হয়। সেসময় Dr. Harry Gillies প্লাস্টিক সার্জারির কৌশলগুলোকে বিভিন্নভাবে উন্নত করেন এবং তিনি ১১ হাজারেরও অধিক আঘাতপ্রাপ্ত সৈন্যর প্লাস্টিক সার্জারি করেন। মূলত প্লাস্টিক সার্জারি করানোর পেছনে প্রধান লক্ষ্য ছিল, সবার মাঝে এমন একটা ধারনা তৈরি করা যে, সৈন্যদের সাথে যা ঘটেছিল তা ভয়ঙ্কর ছিল না। আসলে যুদ্ধের সময় কোন পক্ষই তাদের দুর্বল অবস্থানের কথা শত্রু পক্ষকে জানতে দিতে চাইত না, এজন্য তারা প্লাস্টিক সার্জারির সহায়তায় তাদের সৈন্যদের আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার প্রমাণগুলো মুছে দেওয়ার চেষ্টা করতো।
১০. পাইলট কমিউনিকেশন
বর্তমানে আমরা বিমানের পাইলটদের যে কমিউনিকেশন ব্যবস্থা দেখি সেটিও মূলত প্রথম বিশ্বযুদ্ধ থেকেই এসেছে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগে, বিভিন্ন বিমানে অবস্থান করা পাইলটদের একে অপরের সাথে যোগাযোগ করার মত কোন ব্যবস্থা ছিল না। এমনকি ভূমিতে অবস্থান করা মানুষদের সাথেও যোগাযোগ করার মত কোন উপায় ছিল না। এ সমস্যার সমাধানের জন্য যুদ্ধের শুরুর দিকে, সেনাবাহিনীর লোকেরা তারের মাধ্যমে যোগাযোগ করলেও সে তারগুলো প্রায়ই আর্টিলারি এবং ট্যাঙ্ক এর কারনে কেটে যেতো। এ সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য সেনাবাহিনীরা তারবিহীন পদ্ধতিতে সংযোগ স্থাপন করার সিদ্ধান্ত নেয়। তারা তারবিহীন সংযোগ স্থাপনের জন্য রেডিও প্রযুক্তি ব্যবহার করা শুরু করে। পরবর্তীতে ১৯১৬ সালের শেষের দিকে, রেডিও প্রযুক্তি ব্যবহার করার মাধ্যমে বিমানে রেডিও টেলিফোন ব্যবহার করার প্রচলন শুরু হয়।
আরো জানুন: পৃথিবীর নতুন সপ্তম আশ্চর্য
১১. কাটা চামচ
কাটা চামচের আবিষ্কার মূলত প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় হয়নি। কিন্তু কাটা চামচ এর ব্যাপকভাবে ব্যবহার প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকেই শুরু হয়েছিল। যেহেতু যুদ্ধের সময় প্রায়ই সৈন্যদের নানান ধরনের প্রশিক্ষনীয় কাজ করতে হতো সেহেতু তাদের হাত মাঝে মাঝে অপরিষ্কার থাকত। এই অপরিষ্কার হাতে খাবার খেলে নানান ধরনের রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকত। তাই সেসময় সৈন্যরা খাবার খাওয়ার জন্য কাটা চামচ ব্যবহার করতো। এতে সৈন্যদের সময়ের অপচয় হওয়া এবং অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা দুটোয় অনেকাংশে কমে গিয়েছিল। একইসাথে কাটা চামচ দিয়ে খাবার খাওয়ার কারনে তাদের খুব বেশি পানি অপচয় করতে হতো না।
১২. ভিটামিন
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগে কোন খাবারে আলাদাভাবে ভিটামিন প্রয়োগ করার প্রচলন ছিল না। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময় বিজ্ঞানীরা চিন্তা করতে শুরু করেন যে কিভাবে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান ব্যবহার করে সৈন্যদের উপকৃত করা যায়। এসময় তারা বিভিন্ন মেডিকেল গবেষণার মাধ্যমে এটি বুঝতে পারেন যে, সুষম খাদ্য গ্রহন করার মাধ্যমে সহজেই ভিটামিন গ্রহন করা যায়। এই সুষম খাদ্য গ্রহনের মাধ্যমে সৈন্যরা বিরতিহীনভাবে অধিক সময় যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারত এবং এটি সেসময় সৈন্যদের জন্য যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করতো। পরবর্তীতে, বিজ্ঞানের উন্নতির সাথে সাথে ভিটামিনের ধারনা সবার জন্য সুস্পষ্ট হতে শুরু করে এবং এর ব্যবহারও ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেতে থাকে।
এই ছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কিছু সফল আবিষ্কার যা বর্তমানে আমরা আমাদের নিত্যদিনের নানান কাজে ব্যবহার করে চলেছি। এর মধ্যে কোন আবিষ্কারটি আপনাকে সবথেকে বেশি অবাক করেছে তা অবশ্যই আমাদের কমেন্ট করে জানিয়ে দিন। আজকের বিষয়টি (ইতিহাস) ভালো লেগে থাকলে শেয়ার করুন আপনার বন্ধুদের সাথে। পৃথিবীর এরকম (জানা-অজানা) অদ্ভুত সব অজানা তথ্য জানতে আমাদের সাথেই থাকুন
এছাড়াও যদি আপনি নিয়মিত বিশ্বের ছোট ছোট অদ্ভুত, রহস্যময় ও আশ্চর্যজনক বিষয় সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আমাদের সামাজিক মাধ্যমগুলোর সাথে যুক্ত থাকুন।
ফেইসবুক পেইজ:
ইউটিউব চ্যানেল:
ইনস্টাগ্রাম পেজ: The Earth Bangla
ফেইসবুক গ্রুপ:
প্রশ্নপর্ব
বাণিজ্যিকভাবে প্রথম স্যানিটারি ন্যাপকিনের নাম কি ছিল ?
পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথমবার বাণিজ্যিকভাবে স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরি করে যার নাম দেয়া হয় Kortex।
সর্বপ্রথম কে এবং কখন দিবালোক সংরক্ষণ সময় চালু করে ?
১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দে বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন তাঁর একটি প্রবন্ধে সর্বপ্রথম দিবালোক সংরক্ষণ সময় ব্যবস্থার ধারণা তুলে ধরেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলোতে এই নিয়ম চালু করা হয়েছিল।
হাত ঘড়ি কেন আবিষ্কার করা হয়েছিল ?
ধারনা করা হয়, প্রথম বিশ্বযুদ্ধকে কেন্দ্র করেই হাত ঘড়ি আবিষ্কৃত হয়েছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় হাত ঘড়ি থাকার ফলে সৈন্যরা সময় জ্ঞান সম্বন্ধে অবহিত থাকত। কখন যুদ্ধে যেতে হবে, কখন ঘুমাতে হবে কিংবা কখন খেতে হবে এসকল কিছু একটা রুটিনের আওতায় চলে এসেছিল। বলা যেতে পারে, এই হাত ঘড়ির কারনেই সৈনিকদের মধ্যে এক ধরনের শৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছিল।
কে চেন আবিষ্কার করেছিল ?
সর্বপ্রথম একজন সুইডিশ-আমেরিকান ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার গিডিয়ন সানবেক সফলভাবে চেন আবিষ্কার করতে সক্ষম হন।
লোহার চেয়ে শক্ত বস্তু কোনটি ?
স্টেইনলেস স্টিল লোহার থেকেও বেশি মজবুত এবং শক্তিশালী। স্টেইনলেস স্টিল হল এমন এক ধরনের স্টিল যাতে কখনো মরিচা ধরে না। স্টেইনলেস স্টিলের কারনেই ধাতব শিল্পে অনেক বড় এক বিপ্লব সৃষ্টি হয়।
সর্বপ্রথম কবে বিমানে রেডিও টেলিফোন ব্যবহার করার প্রচলন শুরু হয় ?
১৯১৬ সালের শেষের দিকে, রেডিও প্রযুক্তি ব্যবহার করার মাধ্যমে বিমানে রেডিও টেলিফোন ব্যবহার করার প্রচলন শুরু হয়।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় সৈন্যরা চামচ ব্যবহার করতো কেন?
কাটা চামচ এর ব্যাপকভাবে ব্যবহার প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকেই শুরু হয়েছিল। কারন যুদ্ধে সৈন্যরা অপরিষ্কার হাতে খাবার খেলে নানান ধরনের রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকত। তাই সেসময় সৈন্যরা খাবার খাওয়ার জন্য কাটা চামচ ব্যবহার করতো। এতে সৈন্যদের সময়ের অপচয় হওয়া এবং অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা দুটোয় অনেকাংশে কমে গিয়েছিল। একইসাথে কাটা চামচ দিয়ে খাবার খাওয়ার কারনে তাদের খুব বেশি পানি অপচয় করতে হতো না।
ভিটামিন টিকা নেওয়া প্রচলন শুরু হয় কবে থেকে ?
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগে কোন খাবারে আলাদাভাবে ভিটামিন প্রয়োগ করার প্রচলন ছিল না। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময় সর্বপ্রথম আলাদাভাবে ভিটামিন নাওয়ার প্রচলন চালু হয় যেন সৈন্যরা শারীরিকভাবে সুস্থ থাকে এবং বিরতিহীনভাবে অধিক সময় যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Please do not Enter any spam comment or Link in the comment Box