যে ১০টি দেশ ভারতকে ভালোবাসে

ভারত পৃথিবীর সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র যার বাংলা দাফতরিক নাম ভারত প্রজাতন্ত্র।  এটি দক্ষিণ এশিয়ার একটি রাষ্ট্র যা জনসংখ্যার বিচারে বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল রাষ্ট্র। সুপ্রাচীন কাল থেকেই ভারতীয় উপমহাদেশ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জন্য সুপরিচিত যেখানে ঐতিহাসিক সিন্ধু সভ্যতা গড়ে উঠেছিল। বর্তমানেও দেশটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে সব সময় শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে চলে এবং ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার পর থেকেই বিশ্বের অধিকাংশ রাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক আন্তরিক। The Earth Banglar সেরা ১০ সিরিজের আজকের পর্বে আমরা আপনাদের জানাবো ভারতের বন্ধু ১০টি দেশ সম্পর্কে।

১০. নেপাল

ভারত ও নেপালের মধ্যে একটি দীর্ঘ ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশই একসাথে হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত এবং তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব হিমালয়ের মতোই প্রাচীন ও অটুট। দুই দেশের মধ্যে ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় বন্ধন রয়েছে। ১৯৫০ সালে ভারত ও নেপালের মধ্যে একটি শান্তি ও বন্ধুত্ব চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তির ফলে দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সামরিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু ভারতের সাথে ওপেন বর্ডার সিস্টেমের মাধ্যমে যুক্ত। দুই দেশের নাগরিকরা অবাধে একে অপরের দেশে ভ্রমণ, ব্যবসা, পড়ালেখা, চাকরি, সম্পত্তির মালিকানা নিতে পারে। এই বন্ধুত্ব দুটি দেশের জন্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ।

৯. ভুটান

ভারত ও ভুটানের বন্ধুত্ব দীর্ঘদিনের এবং ঐতিহাসিক। ভারত এবং ভুটানের বন্ধুত্বের ভিত্তি ১৯১০ সালের একটি চুক্তির মধ্যে রয়েছে, যার ফলে ব্রিটিশ ভারত ভুটানের বৈদেশিক বিষয় এবং প্রতিরক্ষার দায়িত্ব গ্রহণ করে। ১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতার পর, ভুটান ভারতের সাথে তার এই সম্পর্ক বজায় রাখে। তাই ভুটানের পররাষ্ট্র নীতি, প্রতিরক্ষা এবং বাণিজ্যের উপর ভারতের বিশেষ প্রভাব রয়েছে। ভারত ভুটানের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক ও সামরিক অংশীদার। তবে ভারত ও ভুটানের বন্ধুত্বের মধ্যে একটি চ্যালেঞ্জ হল সীমান্ত সমস্যা। এই সীমান্ত সমস্যাগুলি উভয় দেশের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, ভারত ও ভুটানের মধ্যে বন্ধুত্ব আরও দৃঢ় হয়েছে। উভয় দেশই বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও জোরদার করেছে।

আরো জানুন: বিশ্বের চিরশত্রু ১০টি দেশ

৮. সিঙ্গাপুর

ভারত এবং সিঙ্গাপুরের মধ্যে বন্ধুত্বের একটি দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। দেশ দুটির মধ্যে সম্পর্ক ব্রিটিশ উপনিবেশিক আমল থেকেই শুরু হয়। ১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতার পর, দুই দেশ তাদের সম্পর্ক বজায় রাখে এবং ১৯৬৫ সালে সিঙ্গাপুর স্বাধীনতা লাভের পর, ভারত সিঙ্গাপুরের সার্বভৌমত্ব এবং অখণ্ডতাকে সমর্থন করে। বর্তমানে, দুই দেশই অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, এবং সামরিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা করে। দুই দেশ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ইস্যুতে একই দৃষ্টিভঙ্গি রাখে।এছাড়াও ভারত সিঙ্গাপুরের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার এবং বিনিয়োগের জন্য ভারত সিঙ্গাপুরের একটি গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্য। উভয় দেশই বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক শক্তি। তাই দুটি দেশ তাদের বন্ধুত্বকে আরও গভীর এবং শক্তিশালী করার জন্য কাজ করছে। 

৭. দক্ষিণ কোরিয়া

ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়া উভয়ই দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি এবং বিশ্ব রাজনীতিতে ক্রমবর্ধমান ভূমিকার অধিকারী দেশ। ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে বন্ধুত্বের ইতিহাস ১৯৪৮ সালে ভারতের স্বাধীনতার পর থেকে শুরু হয়েছিল এবং ১৯৭৪ সালে তাদের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়। উভয় দেশই জাতিসংঘের সদস্য এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পরস্পরকে সহযোগিতা করে। ১৯৯০ এর দশকে, উভয় দেশই অর্থনৈতিক উন্নয়নের দিকে মনোনিবেশ করে এবং তাদের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়তে থাকে। ২০০০ এর দশকে, উভয় দেশই নিরাপত্তা ও সামরিক সহযোগিতা বাড়াতে শুরু করে। তাই ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ক্রমবর্ধমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য দেশ দুটি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

৬. যুক্তরাজ্য

ভারত ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে সম্পর্কের একটি দীর্ঘ এবং জটিল ইতিহাস রয়েছে। ভারত ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে সম্পর্ক ১৭শ শতাব্দীতে শুরু হয়েছিল, যখন ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতে বাণিজ্য শুরু করে। ১৮শ শতাব্দীতে, ব্রিটেন ভারতকে একটি উপনিবেশে পরিণত করে। ব্রিটিশ শাসনকালে, ভারতের অর্থনীতি, সংস্কৃতি এবং সমাজে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে। কিন্তু ১৯৪৭ সালে ভারত ব্রিটিশ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর, ভারত ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে সম্পর্ক কিছুটা শীতল হয়ে যায়। পরবর্তীতে ১৯৯০ এর দশকে, ভারত ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে সম্পর্ক উন্নত হতে শুরু করে এবং দুই দেশ বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধি করে। বর্তমানে, ভারত ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে সম্পর্ক বেশ ভালো। দুই দেশই অর্থনৈতিক, সামরিক এবং সাংস্কৃতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে আগ্রহী।

আরো জানুন: বিশ্বের পারমাণবিক শক্তিধর ১০টি দেশ

৫. যুক্তরাষ্ট্র

ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধুত্ব একটি ক্রমবর্ধমান সম্পর্ক যা গত কয়েক দশকে উল্লেখযোগ্যভাবে শক্তিশালী হয়েছে। ১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতার পর, ভারতের সমাজতান্ত্রিক সরকার এবং যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাদী সরকারের মধ্যে মতপার্থক্য থাকার কারণে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক কিছুটা শীতল হয়ে যায়। এবং ১৯৭০ এর দশকে ভারতের পারমাণবিক পরীক্ষার কারণে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক কিছুটা তিক্ত হয়ে ওঠে। তবে, ১৯৯০ এর দশকের পর, ভারত অর্থনৈতিক সংস্কারের দিকে ঝুঁকে পড়ে এবং যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে এই প্রক্রিয়ায় সমর্থন দেয়। ফলে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক উষ্ণ হতে শুরু করে। ২১ শতকের শুরুতে,  ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠে কারণ উভয় দেশই চীনকে তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করে। বর্তমানে, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। দুই দেশ পারমাণবিক, সামরিক, বাণিজ্য, নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সহযোগিতায় একসাথে কাজ করে।

৪. ফ্রান্স

ভারত ও ফ্রান্সের সম্পর্ক ঐতিহ্যগতভাবে ঘনিষ্ঠ ও বন্ধুত্বপূর্ণ। উভয় দেশের বাণিজ্য সম্পর্কের এক শতাব্দী প্রাচীন ইতিহাস রয়েছে। ফ্রান্স ১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দেওয়া প্রথম পাশ্চাত্য দেশ ছিলএবং ১৯৪৮ সালে তাদের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক  প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ফ্রান্সই প্রথম দেশ, যারা ভারতের সাথে পরমাণু শক্তি নিয়ে চুক্তি করে এবং ভারতকে পারমাণবিক শক্তিতে রূপান্তর হতে সহযোগিতা করেছিল। দুটি দেশ একই মূল্যবোধ এবং স্বার্থ ভাগ করে নেয়, যেমন গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং মুক্ত বাণিজ্য। তারা নিরাপত্তা, অর্থনীতি, সংস্কৃতি এবং শিক্ষার ক্ষেত্রেও ঘনিষ্ঠভাবে সহযোগিতা করে। এই দুই দেশের বন্ধুত্ব ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের স্থিতিশীলতা এবং নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং উভয় দেশই এই অঞ্চলে শান্তি ও সমৃদ্ধি প্রতিষ্ঠার জন্য একসাথে কাজ করছে।

৩. ইসরাইল

ভারত ও ইসরাইলের বন্ধুত্ব একটি ক্রমবর্ধমান সম্পর্ক যা গত কয়েক দশকে দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। ১৯৪৮ সালে ইসরায়েলের প্রতিষ্ঠার পর, ভারত প্রথমে ইসরায়েলের অস্তিত্বকে স্বীকৃতি দেয়নি, কারণ ভারতের তখন সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়নি। তবে, ১৯৯০ এর দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর ভারতের নীতিতে পরিবর্তন আসে। ভারত ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক উন্নত করতে আগ্রহী হয়ে ওঠে এবং ১৯৯২ সালে ভারত ও ইসরাইল কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে। এরপর থেকে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক দ্রুত বৃদ্ধি পায়। ২০১৭ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইসরায়েল সফর করেন যা ছিল ভারতের কোনো প্রধানমন্ত্রীর প্রথম ইসরায়েল সফর।  বর্তমানে ভারত ও ইসরাইলের সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ও শক্তিশালী। দুই দেশ বিশ্বের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ঘনিষ্ঠ অংশীদার এবং তাদের সম্পর্ক আগামী বছরগুলিতে আরও জোরদার হতে চলেছে।

আরো জানুন: বিশ্বের সবচেয়ে বড় ১০টি দেশ

২. জাপান

ভারত ও জাপানের সম্পর্ক ঐতিহ্যগতভাবে সুদৃঢ়। দুটি দেশই গণতন্ত্র, মুক্তবাজার অর্থনীতি এবং সার্বভৌমত্বের মূল্যবোধকে সমর্থন করে। এছাড়াও ভারত ও জাপানের জনগণ বৌদ্ধধর্মের সংস্কৃতি ধারা সম্পর্কযুক্ত। তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ভারতের ব্রিটিশ দখলদার ও জাপানের মধ্যে শত্রুতা ছিল, কিন্তু ভারতের স্বাধীনতার পর থেকে দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণ রয়েছে। ভারত ও জাপানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক ১৯৫২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৯১ সালে ভারতের অর্থনৈতিক উদারীকরণের পর, ভারত ও জাপানের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে জাপান ভারতের বৃহত্তম বিদেশী বিনিয়োগকারী দেশ। ইয়ামাহা, সনি, টয়োটা ও হোন্ডার মতো জাপানি সংস্থাগুলির ভারতে উৎপাদন কেন্দ্র রয়েছে। তাই বলা যায় ভারত ও জাপানের বন্ধুত্ব একটি ক্রমবর্ধমান সম্পর্ক যা ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

১. রাশিয়া

ভারত ও রাশিয়া সম্পর্ক একটি পরস্পর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক যা ঐতিহাসিকভাবে ঘনিষ্ঠ এবং বহুমুখী। এই সম্পর্কটি ১৯৪০ এর দশকে শুরু হয়েছিল, যখন সোভিয়েত ইউনিয়ন ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে সমর্থন করেছিল। তাই সোভিয়েত ইউনিয়নের বিচ্ছেদের পরে, রাশিয়া ভারতের সাথে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছিল। ফলে দুই দেশ সামরিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক সহযোগিতায় জড়িত হয়েছে। এছাড়াও ভারত রাশিয়ার কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র কেনে এবং রাশিয়া ভারতের তেল ও গ্যাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ সরবরাহকারী। তবে  ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন ভারতের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। ভারত রাশিয়ার আগ্রাসন নিন্দা করতে অস্বীকার করেছে, যা পশ্চিমা দেশগুলির সাথে ভারতের সম্পর্কের উপর চাপ সৃষ্টি করেছে। তবে সব কিছু উপেক্ষা করে, বর্তমানে ভারত ও রাশিয়া সম্পর্ক একটি শক্তিশালী এবং স্থিতিশীল ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে চলেছে। উভয় দেশই তাদের সম্পর্ককে আরও গভীর এবং বহুমুখী করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

এছাড়াও যদি আপনি নিয়মিত বিশ্বের ছোট ছোট অদ্ভুত, রহস্যময় ও আশ্চর্যজনক বিষয় সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আমাদের সামাজিক মাধ্যমগুলোর সাথে যুক্ত থাকুন।

ফেইসবুক পেইজ: The Earth Bangla

ইউটিউব চ্যানেল: The Earth Bangla

ইনস্টাগ্রাম পেজ: The Earth Bangla

ফেইসবুক গ্রুপ: The Earth Bangla Family

Post a Comment

Please do not Enter any spam comment or Link in the comment Box

নবীনতর পূর্বতন