এশিয়ার শীর্ষ ধনী দেশ
১০. বাহরাইন
পারস্য উপসাগরের পশ্চিম অংশে অবস্থিত মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ বাহরাইন এশিয়ার দশম ধনী দেশ। ২০২৩ সালে দেশটির মাথাপিছু জিডিপি ২৯,১০৩ মার্কিন ডলার। অর্থ বাণিজ্য এবং পর্যটনের উপর ভিত্তি করেই মূলত দেশটির এতো সমৃদ্ধি। বিশ্বখ্যাত বাহরাইন ইন্টারন্যাশনাল সার্কিটের আবাসস্থল এই বাহরাইনে। ফর্মুলা ওয়ান বাহরাইন গ্র্যান্ড প্রিক্সের পাশাপাশি বিভিন্ন বড় বড় আন্তর্জাতিক ইভেন্টের আয়োজন করে থাকে দেশটি যা তাদের অর্থনীতিকে করেছে শক্তিশালী।
৯. সৌদি আরব
এশিয়ার নবম ধনী দেশ সৌদি আরব মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে বড় অর্থনীতি হিসেবে স্বীকৃত। বর্তমানে রাজনৈতিক নানা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমেও বারবার আসছে দেশটির নাম। দেশটির বর্তমান মাথা পিছু জিডিপি ২৯,৯২২ মার্কিন ডলার। সৌদি আরবের অর্থনীতিতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করছে তাদের খনিজ সম্পদের প্রাচুর্ধ। শুধুমাত্র তেল রপ্তানি করে যে আয় হয় তাই তাদের জিডিপি'র ৪০% এরও বেশি। দেশটি পেট্রোলিয়াম রপ্তানীতেও সারা বিশ্বে প্রথম স্থানে আছে। এছাড়া গ্যাস রিজার্ভে তাদের অবস্থান বিশ্বে পঞ্চম। প্রতিবছর পবিত্র হজ ও ওমরা পালনের জন্য আসা মানুষদের থেকে প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলার আয় হয় দেশটির।
আরো জানুন: এশিয়া মহাদেশ
৮. দক্ষিণ কোরিয়া
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অত্যন্ত উন্নত এশিয়ার দেশ দক্ষিন কোরিয়ার বর্তমান মাথা পিছু জিডিপি প্রায় ৩৩,৩৯৩ মার্কিন ডলার। ১৯৬০ সাল থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত সময়টিতে তারা এতোটাই উন্নয়ন সাধন করে যে, তাদের “Miracle of the Han river” বা “হান নদীর বিস্ময়“ বলা হয়। জিডিপি"র পাশাপাশি ক্রয় ক্ষমতার ভিত্তিতে দেশটি বিশ্বে ১১তম। এই দেশটি বর্তমান পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি বর্ধনশীল অর্থনীতির তকমা পেয়েছে বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে। ১৯৮০ থেকে ১৯৯০ সালে সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন করা দেশ হল দক্ষিণ কোরিয়া। বর্তমান বৈশ্বিক মন্দার মধ্যেও দেশটি অন্তত ১.৫% বার্ষিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
৭. জাপান
৬. কুয়েত
এশিয়ার ৬ষ্ঠ ধনী দেশ কুয়েতের মাথাপিছু জিডিপি ৩৮,১২৩ মার্কিন ডলার। মুদ্রা বিনিময় হারের বিবেচনায় কুয়েতি দিনার বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী মুদ্রা গুলোর একটি। সৌদি আরবের মত এই দেশটিরও রপ্তানী আয়ের সিংহভাগ আসে তেল রপ্তানী থেকে যা তাদের মোট জিডিপির ৯০% এর বেশি। বিশ্বের মোট মজুদকৃত তেলের ১০% রয়েছে কুয়েতে আর তাই দেশটি OPEC এর গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। মাত্র ১৭,৮১৮ বর্গ কিলোমিটারের এই ছোট্ট দেশটি শুধু এশিয়াতে নয় বরং বিশ্ববাণিজ্যেও একটি গুরুত্বপূর্ণ নাম।
৫. ব্রুনেই
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ছোট্ট দেশ ব্রনেই। দেশটির জনসংখ্যা মাত্র মাত্র পাঁচ লক্ষের মতো। তবে, দেশটির মাথাপিছু জিডিপি ৪২,৯৩৯ মার্কিন ডলার এবং এটি এশিয়ার ৫ম ধনী দেশ। এই দেশটিরও রপ্তানী আয়ের সিংহভাগই আসে তেল ও গ্যাস রপ্তানী থেকে যা তাদের মোট জিডিপি'র প্রায় ৯০%। পেট্রোলিয়ামের উপর নির্ভর করেই দেশটির অর্থনীতি শক্তিশালী হয়েছে। এই দেশটিও OPEC এর একটি গুরুত্বপূর্ণ সদস্য।
৪. সংযুক্ত আরব আমিরাত
সংযুক্ত আরব আমিরাত এশিয়ার চতুর্থ ধনী দেশ যাদের মাথাপিছু জিডিপি ৪৯, ৪৫১ মার্কিন ডলার। দেশটির অর্থনীতির সবচেয়ে ইতিবাচক দিক হলো, তারা বিশেষ একটি খাতের ওপর নির্ভরশীল নয় বরং বৈচিত্র্যপূর্ণ বিনিয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের অর্থনীতিকে অনেকটাই ঝুঁকিমুক্ত করতে পেরেছি। দুবাই শহরটি পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তম নগরী এবং সেই সাথে পর্যটন ও বিনিয়োগের আদর্শ গন্তব্য। দুবাইতে অবস্থিত পৃথিবীর উচ্চতম ভবন বুর্জ খলিফা দেখতে প্রতি বছর বিপুল সংখ্যক মানুষ আসে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। ৮৩,৬০০ বর্গ কিলোমিটারের এই দেশটি তেল ও গ্যাস মজুদের দিক থেকে শক্তিশালী অবস্থানে আছে এবং সম্পদের প্রাচুর্যের কারণের বিশ্ব রাজনীতিতে তাদের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে।
৩. ইজরায়েল
২০,৭৭০ বর্গ কিলোমিটারের দেশ ছোট্ট একটি ইজরায়েল যা এশিয়ার ৩য় ধনী দেশ। । সফটওয়্যার, টেলিকমিউনিকেশন, বায়োটেকনলজি ইত্যাদি খাতে অভূতপূর্ব উন্নতির জন্য দেশটি অর্থনীতিতে ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করেছে। বর্তমানে দেশটির মাথাপিছু জিডিপি ৫৫,৫৩৬ মার্কিন ডলার। হীরা কাটা ও পোলিশ করার প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে সারা বিশ্বে হীরা ভিত্তিক বাণিজ্যে ইজরায়েল অতি গুরুত্বপূর্ন এক নাম। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে উন্নত হওয়াসহ আরও বেশ কিছু কারণে খুব কম জনসংখ্যার এই দেশটি আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে অত্যন্ত শক্তিশালী ভূমিকা পালন করে থাকে।
২. কাতার
২০২২ সালে বিশ্বকাপ ফুটবল আয়োজন করে সারা তাক লাগিয়ে দিয়েছিল কাতার। কাতারের জৌলুশ দেখে অবাক হয়েছিল গোটা বিশ্ব। এশিয়ার দ্বিতীয় ধনী দেশ কাতারের মাথাপিছু জিডিপি ৮২,৮৭৭ মার্কিন ডলার। কাতারের অর্থনীতির সবচেয়ে শক্তিশালী ভিত্তি গড়ে দিয়েছে তাদের গ্যাস রপ্তানি। মোট জিডিপির প্রায় ৫০% আসে এই গ্যাস রপ্তানির মাধ্যমেই। কাতারের সরকার দেশটিতে অবকাঠামোগত উন্নয়ের দিকে মনযোগী হওয়ায় সারা দেশে বিভিন্ন সুউচ্চ ভবন, সেতু, স্টেডিয়াম ইত্যাদি তৈরি হয়েছে বিগত কয়েক বছরে। এছাড়াও এয়ারলাইন্স বিজনেসের দিক থেকেও কাতার বিশ্বের নজর কেড়েছে। শুধুমাত্র কাতার এয়ারওয়েজের মাধ্যমে যে আয় হয় তা দেশটির মোট জিডিপির প্রায় ৪.৯%।
আরো জানুন: এশিয়ার সবচেয়ে উন্নত ১০টি দেশ
১. সিঙ্গাপুর
এশিয়ার সবচেয়ে ধনী দেশ সিঙ্গাপুর। মাত্র ৭৩৪.৩ বর্গ কিলোমিটারের এই দেশটির মাথাপিছু জিডিপি ৯১ হাজার মার্কিন ডলার। ১৯৬৫ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত সময়টিতে সিংগাপুরের অর্থনীতি প্রায় ৬% হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করে। সিংগাপুরের অর্থনীতির ভিত কতোটা মজবুত তা বোঝা যায় তাদের ক্রেডিট রেটিং থেকে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রেডিট রেটিং এজেন্সি যারা ঋণ মান নির্ণয় করে তাদের মতে সিংগাপুরের ক্রেডিট রেটিং AAA যা এক ঈর্শনীয় সাফল্য। এছাড়াও ফরেন রিজার্ভের দিক থেকে দেশটি এখন বিশ্বে চতুর্থ। সিংগাপুর শুধু যে ধনী রাষ্ট্র তাই নয়, বিশ্বের বিভিন্ন ধনী লোকদের কাছেও সিংগাপুর একটি আদর্শ গন্তব্য কারণ দেশটির ট্যাক্সের হার অনেক কম। দেশটি যে শুধু সম্পদ ও প্রাচুর্যে ভরপুর তাই নয়, HDI বা Human Development Index এর ভিত্তিতেও দেশটি বিশ্বে নবম। এছাড়া বসবাসযোগ্য দেশের তালিকাতেও এই দেশটি সেরা দশের মধ্যে রয়েছে।
এছাড়াও যদি আপনি নিয়মিত বিশ্বের ছোট ছোট অদ্ভুত, রহস্যময় ও আশ্চর্যজনক বিষয় সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আমাদের সামাজিক মাধ্যমগুলোর সাথে যুক্ত থাকুন।
ফেইসবুক পেইজ:
ইউটিউব চ্যানেল:
ইনস্টাগ্রাম পেজ: The Earth Bangla
ফেইসবুক গ্রুপ:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Please do not Enter any spam comment or Link in the comment Box