ব্ল্যাক হোল সম্পর্কে অজানা তথ্য

রহস্যময় ব্ল্যাক হোল

ব্ল্যাক হোল মহাবিশ্বের সবচেয়ে রহস্যময় একটি বস্তু। ব্ল্যাক হোলকে বাংলায় কৃষ্ণগহ্বর বা কৃষ্ণ বিবর বলা হয়। ব্ল্যাক হোল হল মহাকাশের এমন একটি বিশেষ স্থান যেখান থেকে কোন কিছুই ফিরে আসতে পারেনা। এমনকি আলো পৃথিবীর সবচেয়ে গতিশীল শক্তিকেও ব্ল্যাক হোল নিমিষেই নিজের দিকে টেনে নিতে পারে। The Earth Banglar জ্ঞান বিজ্ঞান সিরিজের আজকের পর্বে আমরা জানব ব্ল্যাক হোল সম্পর্কে অজানা ও অবাক করা কিছু তথ্য।

১. ব্ল্যাক হোলের আবিষ্কারক আইনস্টাইন নয়

আমরা প্রায় সবাই মনে করি যে, ব্ল্যাক হোলের সর্বপ্রথম ধারনা বিজ্ঞানী আইনস্টাইন দিয়েছিলেন। কিন্তু  এই ধারনাটি পুরোপুরি ভুল। বরং আইনস্টাইনের জন্মের বহু পূর্বে ব্ল্যাক হোলের সর্বপ্রথম ধারনা দিয়েছিলেন একজন ইংলিশ বিজ্ঞানী জন মিচেল। ১৭৮৩ সালের ২৭শে নভেম্বর Philosophical Transactions of the Royal Society পত্রিকাতে জন মিচেল সর্বপ্রথম ব্ল্যাক হোলের ধারনা প্রকাশ করেন। সেসময় তিনি ব্ল্যাক হোলকে Dark Stars নামে আখ্যায়িত করেছিলেন। তিনি মনে করতেন, মহাকাশে এমন কিছু জায়গা রয়েছে যেখানে মহাকর্ষীয় বল এতো বেশি যে আলোর বেগও সেই বলকে অতিক্রম করতে পারেনা। তিনি এই ধারনাও প্রকাশ করেছিলেন যে, মহাকাশে আরো অসংখ্য ব্ল্যাক হোল বিদ্যমান রয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সেসময় প্রযুক্তি খুব বেশি আধুনিক ছিল না। তাই সেসময় জন মিচেলের ধারনাগুলো খুব বেশি আলোড়ন সৃষ্টি করতে পারেনি। পরবর্তীতে ১৯৭০ এর দশকে জন মিচেলের লেখাগুলো পুনরায় প্রকাশিত হওয়ার আগ পর্যন্ত পদার্থবিজ্ঞানে তার অমূল্য এই অবদানের কথা সকলের অজানা থেকে গিয়েছিল।

২. মৃত তারা থেকে ব্ল্যাক হোলের উৎপত্তি

বর্তমানে বিশ্বের প্রায় সকল বিজ্ঞানী এই ব্যাপারে একমত প্রকাশ করেছেন যে, মহাকাশের কোনো মৃত তারা থেকে ব্ল্যাক হোলের উৎপত্তি হতে পারে। বিজ্ঞানীরা মনে করেন যে, একটি তারা বা নক্ষত্রে নির্দিষ্ট পরিমাণ জ্বালানি উপস্থিত থাকে। এই জ্বালানিতে মজুদ থাকা হাইড্রোজেন গ্যাস শেষ হয়ে গেলে তারাটির কেন্দ্রীয় মূলবস্তুগুলো সংকুচিত হতে থাকে এবং এভাবে তারাটির মৃত্যু ঘটে। আর এভাবেই মহাকাশে সৃষ্টি হয় অসংখ্য ব্ল্যাক হোল।

আরো জানুন: বিজ্ঞানের অবাক করা ১০টি নতুন আবিষ্কার

৩. ব্ল্যাক হোল প্রকৃতপক্ষে কোন গর্ত নয়

ব্ল্যাক হোল শব্দের বাংলা অর্থ হল কালো গর্ত বা কৃষ্ণগহ্বর। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, ব্ল্যাক হোল আসলেই একটি গর্ত। মূলত ব্ল্যাক হোল মহাকাশের এমন একটি বিশেষ স্থান যেখানে খুব অল্প জায়গায় অনেক পরিমাণ ভর ঘনীভূত হয়ে রয়েছে। এ কারনে ব্ল্যাক হোলকে গর্ত বা গহ্বর বলে আখ্যায়িত করা ঠিক নয়। কিন্তু আমরা জানি, ব্ল্যাক হোলের কাছাকাছি পৌঁছালে কোন বস্তুই ফিরে আসতে পারেনা। অনেকটা গর্তের মতই ব্ল্যাক হোল সবকিছুকে নিজের দিকে টেনে নেয়। মূলত সেজন্যই ব্ল্যাক হোলকে এমন একটি নাম দেয়া হয়েছে।

৪. মহাকাশে অসংখ্য ব্ল্যাক হোল রয়েছে

আমরা কেউ কেউ মনে করি, মহাবিশ্বে সম্ভবত একটিমাত্র ব্ল্যাক হোল রয়েছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে মহাবিশ্বে ঠিক কতগুলো ব্ল্যাক হোল রয়েছে তা আজও বিজ্ঞানীদের জন্য একটি ধাঁধার মত। বিজ্ঞানীরা ধারনা করেন, আমাদের মিল্কিওয়ে গালাক্সিতে প্রায় ১০০ বিলিয়ন তারা বা নক্ষত্র রয়েছে এবং এর মধ্যে প্রতি হাজারে একটি তারা ব্ল্যাক হোলে পরিণত হতে পারে। সুতরাং, ধারনা করা যায়, আমাদের গালাক্সিতে প্রায় ১০০ মিলিয়ন ব্ল্যাক হোল উপস্থিত রয়েছে। এভাবে মহাকাশের প্রতিটি গালাক্সিতে কমপক্ষে ১০০ মিলিয়ন ব্ল্যাক হোল রয়েছে বলে বিজ্ঞানীরা মনে করে।

৫. বিভিন্ন আকারের ব্ল্যাক হোল 

ব্ল্যাক হোলের ব্যাপারে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি তথ্য হল, মহাকাশে বিভিন্ন আকৃতির ব্ল্যাক হোল বিদ্যমান রয়েছে। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, কোন কোন ব্ল্যাক হোলের আকার একটি পরমাণুর মত ছোট হয়, আবার কিছু কিছু ব্ল্যাক হোলের আকার সূর্যের চেয়েও বড় হয়। তবে আকার যেমনই হোক না কেন এই ব্ল্যাক হোলগুলোর ভর অনেক বেশি হয়ে থাকে। এই ভিন্ন ভিন্ন আকারের ব্ল্যাক হোলগুলো হল সুপার মেসিভ ব্ল্যাক হোল, মাইক্রো ব্ল্যাকহোল, ইন্টারমিডিয়েট ব্ল্যাকহোল, স্টেলার ব্ল্যাকহোল ইত্যাদি।

আরো জানুন: আমাজন জঙ্গলের ১৫টি অদ্ভুত সত্যি

৬. সুপারমেসিভ ব্ল্যাক হোল

আকারের ভিত্তিতে সুপারমেসিভ ব্ল্যাক হোল হল সবচেয়ে বড় আকারের ব্ল্যাক হোল। বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা প্রমাণ পেয়েছে যে, মহাবিশ্বে যতগুলো বড় আকৃতির গালাক্সি রয়েছে তাদের প্রত্যেকটির কেন্দ্রে অর্থাৎ মাঝখানে একটি ‘সুপারমেসিভ ব্ল্যাক হোল’ উপস্থিত থাকে। আমাদের মিল্কিওয়ে গালাক্সির কেন্দ্রে যে সুপারমেসিভ ব্ল্যাক হোলটি রয়েছে তার নাম হল সাজিটারিয়াসএই সুপারমেসিভ ব্ল্যাক হোলটি পৃথিবী থেকে প্রায় ২৫০০০ লাইটইয়ার দূরে অবস্থিত। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, কোন বৃহৎ আকৃতির গালাক্সিতে যে সুপার মেসিভ ব্ল্যাক হোলটি থাকে তা ঐ গালাক্সিতে নতুন তারা গঠন এবং তারার সংখ্যা নিয়ন্ত্রন করে।

সুপারমেসিভ ব্ল্যাক
সুপারমেসিভ ব্ল্যাক

৭. সাধারনভাবে ব্ল্যাক হোল দেখতে পাওয়া অসম্ভব

আমরা সবাই জানি যে, ব্ল্যাক হোল দেখতে কালো এবং ব্ল্যাক হোলের কাছাকাছি পৌঁছালে কোন বস্তুই ফিরে আসতে পারেনা। তাই সাধারণ চোখে ব্ল্যাক হোল দেখতে পাওয়া অসম্ভব। এখন প্রশ্ন হল, যদি সাধারণ চোখে ব্ল্যাক হোল না দেখা যায় তাহলে বিজ্ঞানীরা কিভাবে ব্ল্যাক হোলের খোঁজ পায়? আসলে ব্ল্যাক হোলের আশেপাশে যে গ্যাস এবং তারাগুলো থাকে সেগুলো ব্ল্যাক হোলের শক্তিশালী অভিকর্ষ বল দ্বারা প্রভাবিত হয়। আর যখন একটি ব্ল্যাক হোল এবং কোনো তারা খুব কাছাকাছি অবস্থান করে তখন খুব উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন আলো উৎপন্ন হয়। বিজ্ঞানীরা সেই প্রভাব এবং আলো বিভিন্ন স্যাটেলাইট এবং এক্স-রে টেলিস্কোপ দিয়ে দেখতে পান এবং এভাবেই ব্ল্যাক হোলের অবস্থান নির্ণয় করা হয়।

৮. ব্ল্যাক হোল কখনো পৃথিবী ধ্বংস করতে পারবে না

ব্ল্যাক হোলের ভয়াবহতা জানার পর অনেকের মনে হতে পারে যে ব্ল্যাক হোল কি কখনো পৃথিবী ধ্বংস করতে পারবে? এই প্রশ্নের সহজ উত্তর হল, না, সেটি কখনো সম্ভব নয়। কারন ব্ল্যাক হোল মহাশুন্যের  এতো কাছাকাছি অবস্থান করে না যে এটি কোন গ্রহ, তারা ধ্বংস করে ফেলবে। তাছাড়া আমাদের পৃথিবী এবং সৌরজগৎ ব্ল্যাক হোল থেকে অনেক দূরে অবস্থিত। পৃথিবী থেকে সবচেয়ে কাছাকাছি ব্ল্যাক হোলটি প্রায় ১৬০০ লাইটইয়ার দূরে অবস্থিত। আপনি জানলে অবাক হবেন যে, একটি সূর্যের সমান ভরের একটি ব্ল্যাকহোল যদি সৌরজগতে সূর্যের জায়গায় প্রতিস্থাপিত করা হয় তাহলেও পৃথিবী ধ্বংস হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। কারন ব্ল্যাক হোল শুধুমাত্র তখনি ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে যখন কোন কিছু ব্ল্যাক হোলের খুব কাছাকাছি অবস্থান করে অর্থাৎ যতক্ষণ না পর্যন্ত কোন বস্তু ব্ল্যাক হোলের ইভেন্ট হরাইজন পৌঁছায় ততক্ষণ পর্যন্ত ঐ বস্তু ধ্বংস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। তাই আশা করা যায়, আমাদের পৃথিবী কখনো ব্ল্যাক হোল দ্বারা ধ্বংস হবে না। অন্তত এখন পর্যন্ত সেরকম কোন সম্ভাবনা দেখা যায়নি।

৯. ব্ল্যাক হোলের টাইম ডাইলেশন

ব্ল্যাক হোলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি বৈশিষ্ট্য হল ব্ল্যাক হোল সময়কে প্রভাবিত করে। ব্ল্যাক হোলে একটি বিশেষ জায়গা রয়েছে যাকে বলা হয় ইভেন্ট হরাইজন। যদি কোন ব্যক্তি বা বস্তু এই ‘ইভেন্ট হরাইজন’ এ পৌঁছে যায় তাহলে তার জন্য সময় ধীর গতিতে প্রবাহিত হতে শুরু করে। আর এর প্রধান কারন হল ব্ল্যাক হোলের মাধ্যাকর্ষণ বল। সময়ের এই ধীর গতিতে প্রবাহিত হওয়া আইনস্টাইনের থিওরি অফ রিলেটিভিটির ‘টাইম ডাইলেশন’ এর সাথে সম্পর্কযুক্ত। আইনস্টাইনের এই থিওরি অনুযায়ী, যে বস্তুর গতি কম তার সময় দ্রুত চলবে। আর যে বস্তুর গতি বেশি তার সময় আস্তে চলবে। একইভাবে যদি কোন ব্যক্তি বা বস্তু আলোর গতিতে ইভেন্ট হরাইজনে পৌঁছায় তাহলে তার জন্য সময় ধীর গতিতে প্রবাহিত হতে শুরু করবে।

আরো জানুন: বিজ্ঞান সম্পর্কে অজানা ও অবাক করা ১০টি তথ্য

১০. ওয়ার্মহোল রহস্য

ওয়ার্মহোল কি? এই প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে, হোয়াইট হোল সম্পর্কে বলে নেয়া দরকার। হোয়াইট হোল হল ব্ল্যাক হোলের সম্পূর্ণ বিপরীত। আমরা জানি, ব্ল্যাক হোল সবকিছুকে নিজের দিকে টেনে নেয় অর্থাৎ ব্ল্যাক হোলে কোন কিছু প্রবেশ করলে তা বের হয়ে আসতে পারেনা। অন্যদিকে হোয়াইট হোল সবকিছুকে নিজের থেকে বের করে দেয় অর্থাৎ হোয়াইট হোলে কোন কিছুই সহজে প্রবেশ করতে পারে না। অনেক বিজ্ঞানীরা মনে করেন, ওয়ার্মহোল একটি ব্ল্যাক হোল ও একটি হোয়াইট হোলের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে। এই তত্ত্বের ওপর ভিত্তি করে অনেক বিজ্ঞানী ওয়ার্মহোলকে ‘টাইম মেশিন’ এর সাথেও তুলনা করেন। এমনকি অনেক বিজ্ঞানী এই ধারনাও করেন যে, ওয়ার্মহোলের মাধ্যমে এক গালাক্সিতে থেকে অন্য গালাক্সিতে পৌঁছানো সম্ভব। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ওয়ার্মহোল আদৌ আছে কিনা তা নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে রয়েছে নানান ধরনের তর্কবিতর্ক। কারন এখনো পর্যন্ত ওয়ার্মহোলের অস্তিত্বের কোন যথাযথ প্রমান পাওয়া যায়নি।

ওয়ার্মহোল
ওয়ার্মহোল

১১. ব্ল্যাক হোলের মৃত্যু

এই মহাবিশ্বে একটিমাত্র ঘটনাকে আটকানো সম্ভব নয় এবং সেই ঘটনাটি হল মৃত্যু। অন্য সবকিছুর মতই ব্ল্যাক হোলেরও মৃত্যু সম্ভব। কিন্তু কিভাবে? এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন স্টিফেন হকিং তার হকিং রেডিয়েশন থিওরির মাধ্যমে। হকিং তার এই থিওরি দিয়ে প্রমান করেছেন যে, ব্ল্যাক হোল থেকে প্রতিনিয়ত বিকিরণ হচ্ছে এবং এই বিকিরণের জন্য যে পরিমাণ শক্তি প্রয়োজন তা প্রতিটি ব্ল্যাক হোলে বিদ্যমান থাকে। প্রতিনিয়ত বিকিরণের কারনে ব্ল্যাক হোলের ভর এবং শক্তির পরিমাণ কমতে থাকে। এভাবে ভর কমতে থাকার কারনে ব্ল্যাক হোলগুলো ধীরে ধীরে ছোট হতে থাকবে এবং আশা করা যায় একসময় এটি নিঃশেষ হয়ে যাবে। ধারণা করা হয়, ছোট ব্ল্যাক হোলের তুলনায় বড় ব্ল্যাক হোল বেশি পরিমাণ বিকিরণ নিঃসরণ করে এবং তাড়াতাড়ি ছোটো এবং নিঃশেষ হয়। এভাবেই মহাকাশে ব্ল্যাক হোলের মৃত্যু ঘটে।

আরো জানুন: বিশ্বের অজানা ও অবাক করা ১০টি তথ্য

১২. ব্ল্যাক হোলের শব্দ

বিজ্ঞানীরা বলেন, মহাশূন্যে শব্দ যাতায়াত করতে পারেনা। কেননা শব্দ যাতায়াত করার জন্য নির্দিষ্ট মাধ্যম প্রয়োজন। কিন্তু মহাশূন্য এ এমন কোন মাধ্যম নেই যাতে শব্দ যাতায়াত করা সম্ভব নয়। এজন্যই মহাশূন্য এ শব্দ যাতায়াত করতে পারেনা। কিন্তু অবাক করার মত তথ্য হলেও এটি সত্যি যে, ব্ল্যাক হোল থেকে শব্দ শোনা গিয়েছে। আসলে যখন ব্ল্যাক হোল কোন কিছুকে তার নিজের দিকে টেনে নিয়ে যায় তখন এই শব্দ উৎপন্ন হয়। বিজ্ঞানীরা ইতিমধ্যে বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে ২টি ব্ল্যাক হোলের শব্দ রেকর্ড করতে পেরেছেন। কোন বিশেষ ধরনের যন্ত্র ছাড়া ব্ল্যাক হোলের এই শব্দ রেকর্ড করা অসম্ভব।

১৩. ব্ল্যাক হোলের ইভেন্ট হরাইজন

যদি কেউ মনে করে, ব্ল্যাক হোলের সীমানার কাছে পৌঁছালেই মৃত্যু অনিবার্য তাহলে এই ধারনাটি সম্পূর্ণ ভুল। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, ইভেন্ট হরাইজন থেকে দূরত্ব বজায় রেখে ব্ল্যাক হোল পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব। ইভেন্ট হরাইজনের অন্যতম একটি নাম হল The point of no return অর্থাৎ যে বিন্দুতে পৌঁছানোর পর ফিরে আসা অসম্ভব। তাই যদি কোন বস্তু ব্ল্যাক হোলের সীমানায় পৌঁছেও যায় তাহলে ইভেন্ট হরাইজন থেকে দূরত্ব বজায় রেখে ব্ল্যাক হোল থেকে ফিরে আসা সম্ভব।

এই ছিল ব্ল্যাক হোলের ব্যাপারে কিছু অজানা তথ্য। ব্ল্যাক হোলের যে ছবিগুলো এতদিন আমরা দেখে এসেছি সেগুলো বিভিন্ন গ্রাফিক্সের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছিল। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বিজ্ঞানীরা ব্ল্যাক হোলের আসল ছবি তুলতে সক্ষম হয়েছেন। M87 গ্যালাক্সিতে অবস্থিত এই ব্ল্যাক হোলটির ছবি গত ২০ই এপ্রিল, ২০১৯ সালে প্রকাশ করা হয়

ব্ল্যাক হোলের ছবি
ব্ল্যাক হোলের ছবি

এই ব্ল্যাক হোলটির আকার প্রায় ৪০ বিলিয়ন কিলোমিটার। অর্থাৎ আমাদের পৃথিবী থেকে এর আকার ৩০ লাখ গুন বড় এবং এর ভর সূর্যের ভরের চেয়ে ৬.৫ বিলিয়ন গুন বেশি। পৃথিবী থেকে এর দূরত্ব ৫০০ মিলিয়ন ট্রিলিয়ন কিলোমিটার। পৃথিবীজুড়ে স্থাপন করা ৮টি টেলিস্কোপের সাহায্যে এই ব্ল্যাক হোলটির ছবি ধারণ করেছে বিজ্ঞানীরা।

এছাড়াও যদি আপনি নিয়মিত বিশ্বের ছোট ছোট অদ্ভুত, রহস্যময় ও আশ্চর্যজনক বিষয় সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আমাদের সামাজিক মাধ্যমগুলোর সাথে যুক্ত থাকুন।

ফেইসবুক পেইজ: The Earth Bangla

ইউটিউব চ্যানেল: The Earth Bangla

ইনস্টাগ্রাম পেজ: The Earth Bangla

ফেইসবুক গ্রুপ: The Earth Bangla Family

Post a Comment

Please do not Enter any spam comment or Link in the comment Box

নবীনতর পূর্বতন